খাগড়াছড়িতে দিন দিন বাড়ছে পর্যটকদের আগমন। এরই মধ্যে জেলার দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের বিষ্ণু কাবারিপাড়ায় সন্ধান মিলেছে নতুন ঝর্ণার। এর নাম রাখা হয়েছে ‘তৈছামা’ যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায়— ঝর্ণার মা। ত্রিপুরা শব্দ তৈ অর্থ পানি, ছা অর্থ ছড়া এবং তৈছামা অর্থ ঝর্ণার মা। এখানে দুদিকের দুটো ঝর্ণা একত্রে মিলিত হয়েছে। ঝর্ণার এ মিলনস্থলকে বলা হচ্ছে তুয়ারি মাইরাং। অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ নিতে নতুন সন্ধান পাওয়া ঝর্ণা দেখতে স্থানীয় পর্যটক ছাড়াও বাইরে থেকে আসছেন অনেকেই। তৈছামা ঝর্ণা পৌঁছাতে পাড়ি দিতে হয় ছোট-বড় পাহাড়, জুম ক্ষেত, স্রোতস্বিনী ঝিরি ও পাথুরের রাস্তা। লোকালয় থেকে হেঁটে সেখানে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ১ ঘণ্টা। সেখোনে গিয়েই দেখা মিলবে উঁচু-নিচু পাহাড়ে চোখ ধাঁধানো সবুজ জুম। উঁচু পাহাড় থেকে দৃষ্টি যাবে সুদূর দিগন্তে। আকাশছোঁয়া পাহাড় দেখে বিস্মিত হবেন যে কেউ। আর পাহাড়ের পথ পাড়ি দেওয়ার সময় মনে হবে যেন এখান থেকে আকাশছোঁয়া যাবে। জুম পাহাড়ের গায়ে যেন হেলান দিয়ে থাকে নীল আকাশ। এ সময় সেখানে দেখা মেলে শরতের পরিপূর্ণ রূপ। ঝর্ণার বেড়াতে আসা পর্যটক জীবন চৌধুরী, বশির আহমেদ রাজু, আকতার হোসেন ও ছোটন বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, করোনার মধ্যে দীর্ঘদিন যান্ত্রিক জীবনে আটকে ছিলেন তারা। এমন পরিস্থিতি থেকে বের হতে এসেছেন তৈছামা ঝর্ণা দেখতে। যারা অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন, এটি তাদের জন্য অনেক ভালো একটি জায়গা। এখানে আসার পথ অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। তবে এখানে পর্যটকদের যাতায়াতে অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানান স্থানীয়রা। আগত পর্যটকদের গাইড সুবিধাও দিতে চান তারা। এ বিষয়ে মেরুং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য গনেশ ত্রিপুরা জানান, ঝর্ণায় যাতায়াতের পথ কিছুটা ঝুঁকিপুর্ণ। সরকারের পক্ষ থেকে রাস্তাসহ অবকাঠামো নির্মাণ করে দিলে সুবিধা হবে। পর্যটক বেড়াতে আসলে গাইড সুবিধা দেওয়া যাবে। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, খাগড়াছড়িতে তৈদুছড়া, তুয়ারি মাইরাং, রিছাং, তৈছামাসহ বেশ কয়েকটি ঝর্ণা রয়েছে। ঝর্ণা ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি গাইড সুবিধা কীভাবে দেওয়া যায় তা নিয়েও চিন্তা করা হচ্ছে।